• You MUST read the Linktaka Rules before making your first post otherwise you may get permanent warning points or a permanent Ban.

    Our resources on Linktaka Forum are AUTHENTIC and SAFE. This Website also help students for all types of Competitive Exams and studies. Our mission is all the subject information reach to students through Internet. All resources are double checked by our experts. We hope you enjoy our service as much as we enjoy offering them to you "Enjoy your presence on Linktaka".

পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Bengali Pather Dabi Question and Answer​


পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Bengali Pather Dabi Question and Answer : এই দশম শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – WBBSE Class 10 Bengali Pather Dabi Question and Answer, Suggestion, Notes পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সাজেশন:পথের দাবী (উপন্যাস) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় থেকে বহুবিকল্পভিত্তিক, সংক্ষিপ্ত, অতিসংক্ষিপ্ত এবং রোচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর (MCQ, Very Short, Short, Descriptive Question and Answer) গুলি আগামী পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য খুব ইম্পর্টেন্ট।

আপনারা যারা আগামী মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য বা মাধ্যমিক বাংলা – পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় প্রশ্ন ও উত্তর খুঁজে চলেছেন, তারা নিচে দেওয়া প্রশ্ন ও উত্তর ভালো করে পড়তে পারেন।



Madhyamik Bengali Pather Dabi Question and Answer

শ্রেণী
দশম শ্রেণী (মাধ্যমিক)
বিষয়
মাধ্যমিক বাংলা
গল্প
পথের দাবী ( Pather Dabi)
লেখক
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

[Post সম্পর্কে কোন পরামর্শ বা অনুরোধ বা অন্য কোন বক্তব্য থাকলে নীচে কমেন্ট বক্সে জানাতে পারো না হলে সরাসরি আমাকে মেসেজ করতে পারো]

আমাদের এই পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এই পোস্টটি থেকে যদি আপনি লাভবান হন তাহলে আমাদের পরিশ্রম সফল হবে। যেকোন প্রশ্নের উত্তর জানতে এই ওয়েবসাইটি ফলো করুন এবং নিজেকে তথ্যসমৃদ্ধ করে তুলুন, ধন্যবাদ।

পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal Madhyamik Class 10th Bengali Pather Dabi Question and Answer​

MCQ | পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Bengali Pather Dabi Question and Answer :​



১. "কাকাবাবু, এই লোকটিকে আপনি কোন কথা জিজ্ঞেস না করে ছেড়ে দিন..." -অপূর্ব কাকে 'কাকাবাবু' বলে সম্বোধন করেছেন?

(ক) রামদাসকে (খ) জগদীশবাবুকে (গ) নিমাইবাবুকে (ঘ) তেত্তয়ারিকে

উত্তর: (গ) নিমাইবাবুকে

2. "আর যাই হোক, যাকে খুঁজছেন তার কালচারের কথাটা একবার ভেবে দেখুন।" - বক্তা হলেন -

(ক) অপূর্ব (খ) পুলিশ অফিসার (গ) নিমাইবাবু (ঘ) জগদীশবাবু

উত্তর: (ক) অপূর্ব

3. "পথে কুড়িয়ে পেলাম..." - বক্তা পথে কি কুড়িয়ে পেয়েছিলেন?

(ক) দেশলাই বাক্স (খ) জ্যামিতি বক্স (গ) দুইশো টাকা (ঘ) গাঁজার কলকে

উত্তর (ঘ) গাঁজার কলকে

4. "বুড়ো মানুষের কথাটা শুনো।" - 'বুড়ো মানুষ’ বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে?

(ক) জগদীশবাবুকে (খ) নিমাইবাবুকে (গ) রামদাসকে (ঘ) গিরিশ মহাপাত্রকে

উত্তর (খ) নিমাইবাবুকে

5. "দয়ার সাগর! পরকে সেজে দি, নিজে খাইনে।" - উক্তিটির বক্তা হলেন -

(ক) গিরিশ মহাপাত্র (খ) নিমাইবাবু (গ) অপূর্ব (ঘ) জগদীশবাবু

উত্তর (ঘ) জগদীশবাবু

6. ব্রিটিশ সরকার শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাস টি বাজেয়াপ্ত করে, সেটি হল -

(ক) শ্রীকান্ত (খ) পথের দাবী (গ) চরিত্রহীন (ঘ) গৃহদাহ

উত্তর : (খ) পথের দাবী

7. তেলের খনির কারখানার শ্রমিকরা চাকরির উদ্দেশ্যে কোথায় গিয়েছিল?

(ক) রেঙ্গুন (খ) ডিগবয় (গ) আমেদাবাদ (ঘ) মায়ানমার

উত্তর: (ক) রেঙ্গুন

8. পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট সব্যসাচী মল্লিক কে হাজির করা হয় –

(ক) পুলিশ অফিসারের সামনে (খ) নিমাই বাবুর সামনে (গ) অপূর্বর সামনে (ঘ) জগদীশবাবুর সামনে

উত্তর: (খ) নিমাইবাবুর সামনে

9. মুগ্ধ হয়ে গিরীশ মহাপাত্রের দৃষ্টির দিকে তাকিয়ে ছিল –

(ক) অপূর্ব (খ) পুলিশ অফিসার (গ) নিমাইবাবু (ঘ) জগদীশবাবু

উত্তর: (ক) অপূর্ব

10. "... বাবুটির স্বাস্থ্য গেছে, কিন্তু শখ ষোল আনা বজায় আছে তা স্বীকার করতে হবে।" - কথাটি বলেছে

(ক) নিমাই বাবু (খ) জগদীশবাবু (গ) অপূর্ব (ঘ) রামদাস

উত্তর: (ক) নিমাই বাবু

11. "বলিতে বলিতে কণ্ঠস্বর তাহার তীক্ষ্ণ এবং চোখের দৃষ্টি প্রখর হইয়া উঠিল" - এখানে কার কথা বলা হয়েছে?

(ক) জৈনিক দেশ প্রেমিক (খ) তলওয়ারকর (গ) অপূর্ব (ঘ) রামদাস

উত্তর : (গ) অপূর্ব

12. "কার লাঞ্ছনা এই কালো চামড়ার নিচে কম জ্বলে না" - এখানে কোন লাঞ্ছনার কথা বলা হয়েছে?

(ক) ফিরিঙ্গি ছেলেদের অপূর্বকে লাথি মেরে প্ল্যাটফর্ম থেকে বের করে দেওয়া (খ) ট্রেনে অপূর্ব প্রতি পুলিসের অত্যাচার (গ) বিপ্লবীদের ওপর পুলিশের অত্যাচার (ঘ) ঘরে চুরি যাওয়ার কথা সাহেবের লাঞ্ছনা

উত্তর : (ক) ফিরিঙ্গি ছেলেদের অপূর্বকে লাথি মেরে প্ল্যাটফর্ম থেকে বের করে দেওয়া

13. "আমার অবর্তমানে সমস্ত বাড়ি তো তোমার" - কথাটি বলেছেন -

(ক) হেড কেরানি (খ) ছোট সাহেব (গ) মালিক (ঘ) বড় সাহেব

উত্তর (ঘ) বড় সাহেব

14. "বামুনের ছেলে, বাংলা লেখাপড়া, শাস্তর-টাস্তর সবই কিছু কিছু শিখে ছিলাম" - উক্তিটির বক্তা হলেন -

(ক) গিরিশ মহাপাত্র (খ) অপূর্ব (গ) নিমাইবাবু (ঘ) রামদাস

উত্তর : (ক) গিরিশ মহাপাত্র

15. "সে হাত বাড়াইয়া বন্ধুর করমর্দন করিলো।" - এখানে বন্ধুটি কে?

(ক) জগদীশবাবু (খ) অপূর্ব (গ) গিরিশ মহাপাত্র (ঘ) নিমাইবাবু

উত্তর : (খ) অপূর্ব

16. "ইচ্ছা করিলে আমি তোমাকে টানিয়া নিচে নামাইতে পারে" - কথাটি কে বলেছেন?

(ক) গিরিশ মহাপাত্র (খ) বমা সাব-ইন্সপেক্টর (গ) এক পুলিশ (ঘ) অপূর্ব

উত্তর : (খ) বমা সাব-ইন্সপেক্টর

17. "আচ্ছা, তুমি এখন যেতে পারো মহাপাত্র।" - কথাটি কে বলেছেন?

(ক) জগদীশবাবু (খ) নিমাইবাবু (গ) পুলিশ অফিসার (ঘ) অপূর্ব

উত্তর (খ) নিমাইবাবু

18. "কিন্তু এই জানোয়ারটাকে ওয়াজ করবার দরকার নেই বড়বাবু।" - কথাটি কে বলেছেন?

(ক) গিরিশ মহাপাত্র (খ) অপূর্ব (গ) রামদাস (ঘ) জগদীশবাবু

উত্তর (ঘ) জগদীশবাবু

19. "কোন এক অদৃশ্য অপরিজ্ঞতা রাজবিদ্রোহী চিন্তাতেই ধ্যানস্থ হয়ে রইল।" - এখানে রাজদ্রোহী কে?

(ক) সব্যসাচী মল্লিক (খ) গিরিশ মল্লিক (গ) গিরিশ মহাপাত্র (ঘ) সব্যসাচী দেব

উত্তর (ক) সব্যসাচী মল্লিক

20. "তাহার পোশাক-পরিচ্ছদের বাহার মনে পড়িয়া হঠাৎ হাসির ছটায় যেন দম আটকাইবার উপক্রম হল।" - এখানে যার কথা বলা হয়েছে তিনি হলেন -

(ক) একজন বিপ্লবী (খ) জেল ফেরত আসামি (গ) গিরিশ মহাপাত্র (ঘ) জেল পলাতক বিপ্লবী

উত্তর (গ) গিরিশ মহাপাত্র

21. "বাবাই একদিন এঁর চাকরি করে দিয়েছিলেন।" - এঁর বলতে এখানে কাকে বোঝানো হয়েছে?

(ক) রামদাসকে (খ) নিমাইবাবুকে (গ) জগদীশবাবুকে (ঘ) সব্যসাচী মল্লিককে

উত্তর : (খ) নিমাইবাবুকে

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion :​


1. ‘ পরকে সেজে দি , নিজে খাইনে কখন এমন উক্তি করা হয়েছে ?
Answer: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে খানাতল্লাশির সময় গিরীশ মহাপাত্রের কাছে একটি গাঁজার কলকে পাওয়া যায় । গিরীশ জানায় যে , সে বন্ধুবান্ধবদের গাঁজা দিলেও নিজে খায় না । তার এ কথায় চটে গিয়ে জগদীশবাবু প্রশ্নোত উক্তিটি করেছিলেন ।

2. ‘ জগদীশবাবু চটিয়া উঠিয়া কহিলেন— জগদীশবাবুর চটে ওঠার কারণ কী ছিল ?
Answer: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে গাঁজা খাওয়ার সমস্ত লক্ষণ গিরীশ মহাপাত্রের আচার – আচরণে বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও সে গাঁজা খাওয়ার কথা অস্বীকার করেছিল । এ জন্যেই জগদীশবাবু চটে গিয়েছিলেন ।

3. কিন্তু শখ ষোলোআনাই বজায় আছে কোন্ প্রসঙ্গে বক্তা এমন উক্তি করেছেন ?
Answer: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে বর্মা পুলিশের বড়োকর্তা নিমাইবাবু পুলিশের চোখে সন্দেহভাজন হিসেবে ধৃত গিরীশ মহাপাত্রের বেশভূষার বাহার ও পরিপাট্য দেখে ; সহাস্যে অপূর্বর দৃষ্টি আকর্ষণ করে এমন মন্তব্য করেছিলেন ।

4. ‘ তবে এ বস্তুটি পকেটে কেন ? ‘ — কোন্ বস্তুটি পকেটে ছিল ?
Answer: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে গিরীশ মহাপাত্রের পকেট থেকে পাওয়া গাঁজার কলকের কথা নিমাইবাবু বলেছেন ।

5. ‘ আজ থেকে মাথায় তুলে নিলাম’— বস্তুা কী মাথায় তুলে নিয়েছেন ?
Answer: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে অপূর্বর মতে শতসহস্র পরাধীন দেশবাসীকে অবর্ণনীয় অপমান – অত্যাচারের হাত থেকে যে দেশপ্রেমিক বিপ্লবীরা উদ্ধার করতে চায় , তাঁদের সে অন্তরের আপন বলেই মনে করে । তাঁদের আপনার বলে মনে করায় যে দুঃখই থাক তা অপূর্ব সহ্য করতে প্রস্তুত । এ দায়িত্বই সে মাথায় তুলে নিয়েছে ।

6. ‘ তা ছাড়া এত বড়ো বন্ধু।— ‘ বন্ধু ’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে ?
Answer: ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশে ‘ বন্ধু ‘ বলতে অপূর্বের ঘরের উপরের তলায় বসবাসকারিণী ক্রিশ্চান মহিলার কথা বলা হয়েছে । তিনি অপূর্বর টাকাপয়সা ছাড়া বাকি জিনিস চোরের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন ।

7. ‘ আমার ইচ্ছা তুমি একবার সবগুলো দেখে আস / —কী দেখে আসার কথা হয়েছে ?
Answer: ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশে অপূর্বর বড়োবাবু তাদের ভামো , ম্যান্ডালে , শোএবো , মিথিলা এবং প্রোমে – এর অফিসগুলির বিশৃঙ্খলা ও গোলযোগের কথা বলেছেন । সেগুলি অপূর্বকে দেখে আসার কথা বলেছেন ।

8. ‘ এই সেই গিরীশ মহাপাত্র / — ‘ এই সেই ‘ বলার কারণ কী ?
Answer: অপূর্ব গিরীশ মহাপাত্রকে দু – বার দেখেছিল । প্রথমবার থানায় আর দ্বিতীয়বার রেলওয়ে স্টেশনে । অপূর্বর বর্ণনা অনুযায়ী রামদাস সহজেই তাকে চিনে নেয় ও এমন মন্তব্য করে ।

9. কিন্তু তোমার বাপু একটা ভুল হয়েছে , কার ,, কোন ভুল হয়েছিল ?
Answer: অপূর্বকে প্রথমবার পুলিশ থানায় দেখে গিরীশ মহাপাত্র তাকে পুলিশের লোক ভাবে । দ্বিতীয়বার রেলস্টেশনে তাদের দেখা হলে , অপূর্ব তার ভুল ভাঙাবার জন্য তাকে এই কথা বলে ।

10. কিন্তু এই হাসিতে তলওয়ারকর যোগ দিল না । তলওয়ারকর হাসিতে যোগ দিল না কেন ?
Answer: রেলস্টেশনে গিরীশ মহাপাত্রকে এক ঝলক দেখেই তলওয়ারকর তাকে পুলিশের সন্দেহভাজন বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক বলে সন্দেহ করেছিল । তাই অপূর্বর হাসির কথায় সে যোগ দিতে পারেনি ।

11. ‘ ইহা যে কত বড়ো ভ্রম তাহা কয়েকটা স্টেশন পরেই সে অনুভব করিল ।’— ‘ ভ্রম’টি বলা হয়েছে ?
Answer: ভামো যাত্রাকালে ট্রেনে প্রথম শ্রেণির টিকিট থাকায় অপূর্ব রাত্রের ঘুমটা ভালোই হবে ভাবলেও পুলিশি তদন্ত ও ভারতীয় বলে তাকে অসম্মানিত হতে হয় । তার ধারণা ‘ ভ্রমে ‘ পরিণত হয় ।

12. গিরিশ মহাপাত্রের গায়ে কোন ধরনের পোশাক ছিল ?
Answer: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে গিরীশ মহাপাত্রের গায়ে ছিল জাপানি সিল্কের রামধনু রঙের চুড়িদার পাঞ্জাবি আর তার বুকপকেট থেকে একটি বাঘ – আঁকা রুমালের কিছুটা দেখা যাচ্ছিল । তবে কাঁধে উত্তরীয়ের কোনো বালাই ছিল না ।

13. খানাতল্লাশির পর গিরীশ মহাপাত্রের কাছ থেকে কী কী পাওয়া গিয়েছিল ?
Answer: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে খানাতল্লাশির পর গিরীশ মহাপাত্রের কাছ থেকে একটি টাকা , গণ্ডা – ছয়েক পয়সা , একটি লোহার কম্পাস , মাপ করার কাঠের ফুটরুল , কয়েকটি বিড়ি , একটি দেশলাই এবং একটি গাঁজার কলকে পাওয়া গিয়েছিল ।

14. ‘ অপূর্ব মুগ্ধ হইয়া সেই দিকেই চাহিয়া ছিল— মুগ্ধ অপূর্ব কোন্ দিকে চেয়েছিল ?
Answer: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে অপূর্ব মুগ্ধ হয়ে গিরীশ মহাপাত্রের অদ্ভুত দুটি চোখের দিকে চেয়েছিল ।

15. সে যে বর্মায় এসেছে এ খবর সত্য- ‘ সে ‘ বলতে কার কথা বলা হয়েছে ?
Answer: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ থেকে উদ্ধৃত উদ্ভিটির বন্ধা বর্মা পুলিশের বড়োকর্তা নিমাইবাবু । তিনি এখানে ‘ সে ‘ বলতে রাজবিদ্রোহী বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিকের কথা বলেছেন ।

16. থানায় আটক করা হ – জন বাঙালি রেঙ্গুনে এসেছিল কেন ?
Answer: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে থানায় আটক করা হ – জন বাঙালির প্রত্যেকেই উত্তর ব্রহ্মে বর্মা অয়েল কোম্পানির তেলের খনির কারখানার মিস্ত্রি । কিন্তু জল – হাওয়া সহ্য না হওয়ায় তারা অন্য কাজের খোঁজে রেঙ্গুনে চলে এসেছিল ।

17. ইত্যবসরে এই ব্যাপার । কোন ব্যাপারের কথা বলা হয়েছে ?
Answer: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশে অপূর্বর সহকর্মী তেওয়ারি , বর্মা নাচ দেখতে ফয়ায় যাওয়ার অবসরে তাদের বাড়িতে চুরি হয়ে গিয়েছিল । এই ব্যাপারের কথাই এখানে বলা হয়েছে ।

18. ‘ তিনি আমার আত্মীয় , আমার পিতার বন্ধু।— ‘ তিনি ‘ প্রশ্ন বলতে যাঁর কথা বলা হয়েছে , তাঁর পরিচয় দাও ।
Answer: উদ্ধৃতাংশে ‘ তিনি ‘ বলতে থানার বড়োবাবু নিমাইবাবুকে বোঝানো হয়েছে । তিনি অপূর্বর বাবার বন্ধু তাই তার পিতৃস্থানীয় । নিমাইবাবুর চাকরির পিছনে অপূর্বর বাবার অবদান ছিল ।

19. ‘ তিনি ঢের বেশি আমার আপনার।- কোন্ প্রসঙ্গে এই উক্তিটি করা হয়েছে ?
Answer: এক্ষেত্রে ‘ তিনি ‘ হলেন বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক । ইংরেজ পুলিশ নিমাইবাবু অপূর্বর আত্মীয়স্থানীয় হলেও দেশপ্রেমিক সব্যসাচীকে দেশভক্ত অপূর্বর বেশি আপন বলে মনে হয়েছে ।

20. ‘ বাবুজি , এসব কথা বলার দুঃখ আছে।— কোন্ সব কথা বললে দুঃখ হতে পারে বলা হয়েছে ?
Answer: উদ্ধৃতিটির বক্তা অপূর্বর সহকর্মী তলওয়ারকার । দুঃখ ঘটার মতো কথাগুলি হল ইংরেজ পুলিশ নিমাইবাবু অপূর্বর আত্মীয় হলেও স্বাধীনতাযুদ্ধে আত্মনিয়োগকারী সব্যসাচীই তার বেশি আপন ।

21. ‘ কই এ ঘটনা তো আমাকে বলেননি / — কোন্‌ ঘটনা ?
Answer: ‘ ঘটনাটি ’ হল ‘ পথের দাবী ‘ – র কেন্দ্রীয় চরিত্র অপূর্বর বিনা দোষে ফিরিঙ্গি যুবকদের হাতে মার খাওয়া । এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে ভাগ্যে জুটেছিল একরাশ লাঞ্ছনা ।

22. ‘ মনে হলে দুঃখে লজ্জায় ঘৃণায় নিজেই যেন মাটির সঙ্গে মিশিয়ে যাই।— কোন কথা মনে করে অপূর্বের এই মনোবেদনা ?
Answer: অপূর্ব বিনাদোষে ফিরিঙ্গি যুবকদের হাতে মার খাওয়া সত্ত্বেও উপস্থিত ভারতীয়রা অভ্যেসবশত এর কোনো প্রতিবাদ করেনি । এই কথা মনে করেই অপূর্বর এই মনোকষ্ট ।

23. ‘ পুলিশ স্টেশনে প্রবেশ করিয়া দেখা গেল – কী দেখা গেল ?
Answer: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশের আলোচ্য অংশে দেখা গেল , পুলিশস্টেশনের সামনের হলঘরে জনা ছয়েক বাঙালি বসে আছে আর পুলিশ তাদের মালপত্র তল্লাশি করছে ।

24.‘ তাহাকে আর একটা ঘরে আটকাইয়া রাখা হইয়াছে । — কাকে আটকে রাখার কথা বলা হয়েছে ?
Answer: ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশে গিরীশ মহাপাত্রর ছদ্মবেশীধারী রাজবিদ্রোহী সব্যসাচী মল্লিককে আটকে রাখার কথা বলা হয়েছে । বর্মা পুলিশ এই সন্দেহভাজনকে জিজ্ঞাসার জন্য আটক করেছিলেন ।

25. ‘ লোকটি কাশিতে কাশিতে আসিল । — লোকটির পরিচয় দাও ।
Answer: ‘ পথের দাবী ’ – তে লোকটি বলতে গিরীশ মহাপাত্রের ছদ্মবেশধারী রাজবিদ্রোহী সব্যসাচীর কথা বলা হয়েছে । সন্দেহবশত পুলিশ তাঁকে আটক করলেও পরে আচার – আচরণ ও বেশভূষা দেখে পুলিশ গিরীশকে ছেড়ে দেয় ।

26. ‘ সহসা আশঙ্কা হয় , ‘ — কোন্ আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে ?
Answer: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশে রোগা চেহারার গিরীশ মহাপাত্র সামান্য কাশির পরিশ্রমে এতটাই হাঁপাতে থাকে যে , মনে হয় । মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী । সেই মৃত্যু আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে ।

27. ‘ ভয় হয় এখানে খেলা চলিবে না , ‘ — উক্তিটি পরিস্ফুট করো ।
Answer: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশে সব্যসাচী বিচিত্র পোশাকের ও অসুস্থতার আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে রাখলেও তার বুদ্ধিদীপ্ত চোখ দুটিকে সে লুকোতে পারেনি । সে চোখের সামনে কপটতার চেয়ে সরে দাঁড়ানো ভালো ।

28. ‘ কেবল এই জন্যই যেন সে আজও বাঁচিয়া আছে ।— ‘ এই জন্যই ’ বলার কারণ কী ?
Answer: ভগ্নস্বাস্থ্য গিরিশ মহাপাত্রকে দেখে মনে হত তার মৃত্যু আসন্ন । কিন্তু তার দৃষ্টির গভীরে এমন প্রাণশক্তি লুকিয়ে ছিল , যাকে মৃত্যুও ভয় পেত ।

29. ‘ কী বল অপূর্ব । অপূর্বর কাছে কোন কথার সমর্থন আশা করা হয়েছে ?
Answer: ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশে নিমাইবাবু ভগ্নস্বাস্থ্য গিরীশ মহাপাত্রর বাহারি পোশাকের প্রতি অপূর্বর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বাঙ্গার্থে যে – কথা বলেছিলেন তারই সমর্থনের কথা বলা হয়েছে ।

30. তার আমি জামিন হতে পারি — কে , কীসের জামিন হতে চেয়েছে ?
Answer: নিমাইবাবু জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গিরিশ মহাপাত্রকে আটক করলেও তার বেশভুষা ও আচরণ দেখে অপূর্বর ধারণা হয় সে সব্যসাচী নয় । তাই অপূর্ব উক্ত বিষয়ে জামিন হতে চায় ।

31. ‘ নিমাইবাবু চুপ করিয়া রহিলেন । —নিমাইবাবুর চুপ করে থাকার কারণ কী ?
Answer: গিরীশ মহাপাত্র যে রাজদ্রোহী সব্যসাচী নয় , অপূর্বর এই আশ্বাসে নিমাইবাবু আস্থা রাখলেও সব্যসাচীর প্রখর বুদ্ধি সম্পর্কেও তিনি ওয়াকিবহাল । তাই নিশ্চিত না হয়ে তিনি চুপ থেকেছেন ।

32. ‘ দেখি তোমার ট্যাকে এবং পকেটে কী আছে ? ‘ গিরীশ মহাপাত্রের ট্যাকে ও পকেটে কী কী পাওয়া গিয়েছিল ?
Answer: গিরীশ মহাপাত্রের ট্যাক থেকে পাওয়া যায় একটি টাকা ও গণ্ডার ছয়েক পয়সা । পকেট থেকে পাওয়া যায় একটা লোহার কম্পাস ও ফুটরুল । এ ছাড়া বিড়ি – দেশলাই ও গাঁজার কলকেও পাওয়া যায় ।

33. ‘ দেখো জগদীশ , কিরুপ সদাশয় ব্যক্তি ইনি । ব্যক্তিটিকে সদাশয় বলা হয়েছে কেন ?
Answer: নিমাইবাবু গিরীশ মহাপাত্রকে তল্লাশির সময় তার পকেটে গাঁজার কলকে পান । সে – সম্পর্কে প্রশ্ন করলে সে জানায় কলকেটি নিজের চেয়ে অপরের প্রয়োজনাথেই তার পকেটে । তাই নিমাইবাবুর এই উক্তি ।

34. ‘ বুড়োমানুষের কথাটা শুনো।— বুড়ো মানুষ কোন্ কথা বলেছিলেন ?
Answer: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশে আলোচ্য অংশে বুড়ো মানুষ অর্থাৎ প্রৌঢ় নিমাইবাবু , গিরীশ মহাপাত্রকে তার স্বাস্থ্যের কথা মনে রেখে গাঁজা না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন ।

35. ‘ বড়োবাবু হাসিতে লাগিলেন । বড়োবাবুর হাসার কারণ কী ছিল ?
Answer: গিরিশ মহাপাত্রের উৎকট নেবুর তেলের গন্ধে থানাসুদ্ধ সব লোকের মাথা ধরিয়ে দেওয়ায় জগদীশবাবু তাকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় । এটাই বড়োবাবুর হাসির কারণ ।

36. ‘ অপূর্ব রাজি হইয়াছিল । কোন প্রসঙ্গে এ কথা বলা হয়েছে ?
Answer: ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশে অপূর্বর সহকর্মী তলওয়ারকরের স্ত্রীর অনুরোধ ছিল বাড়ির কেউ না আসা পর্যন্ত অপূর্বকে তার হাতে তৈরি মিষ্টান্নে জলযোগ সম্পন্ন করতে হবে । সে – কথায় অপূর্ব রাজি হয়েছিল ।

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর | পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion :​


1.‘ বাস্তবিক , এমন তৎপর , এত বড়ো কার্যকুশলা মেয়ে আর যে কেহ আছে মনে হয় না হে তলওয়ারকর।— মেয়েটি কে ? তাকে ‘ কার্যকুশলা ‘ বলার কারণ কী ?
Answer: আলোচ্য অংশে ‘ মেয়ে ‘ বলতে অপূর্বর বাড়ির উপরতলায় বসবাসকারী একজন ক্রিশ্চান মেয়েকে বোঝানো হয়েছে ।

যেদিন অপূর্বের ঘরে চোর ঢুকেছিল , সেদিন এই মেয়েটির জন্যই তার টাকাপয়সা ছাড়া বাকি সব জিনিসপত্র চুরি থেকে রক্ষা পেয়েছিল । শুধু তাই নয় , মেয়েটি অপূর্বর সব ছড়ানো জিনিসপত্র গুছিয়ে দিয়ে , ফর্দ করে কী আছে আর কী কী চুরি গেছে তার নিখুঁত হিসাব পর্যন্ত তৈরি করে রাখে । মেয়েটির তৎপরতায় অপূর্ব মুগ্ধ হয়ে তাকে ‘ কার্যকুশলা ‘ বিশেষণে ভূষিত করে ।

2.গিরীশ মহাপাত্রের চুলের পারিপাট্য কীরুপ ছিল , তা সংক্ষেপে লেখো ।
Answer: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাসের ছদ্মবেশী গিরীশ মহাপাত্রের চেহারার বর্ণনার সঙ্গে লেখক তাঁর চুলের পারিপাট্যের সুন্দর বর্ণনাও দিয়েছেন । তাঁর মাথার সামনের দিকের চুল বড়ো থাকলেও পিছনের দিকে তা প্রায় ছিল না বললেই হয় । তেল চুলের পরিপাট্য চুপচুপে চুলের মাঝখান দিয়ে সিঁথি কাটা । চুল থেকে নেবুর তেলের উগ্র অসহনীয় গন্ধ থানাসুদ্ধ লোকের এমন মাথা ধরিয়ে দিয়েছিল যে , জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেও তাঁরা তাঁকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হন ।

3. ‘ এ লোকটিকে আপনি কোনো কথা জিজ্ঞেস না করেই ছেড়ে দিন , — ‘ লোকটি কে ? তাকে কোনো কথা জিজ্ঞেস না – করেই ছেড়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে কেন ?
Answer: ‘ পথের দাবী ‘ – র উদ্ধৃত উক্তিটিতে ‘ লোকটি ‘ হল পুলিশস্টেশনে আটক সন্দেহভাজন গিরীশ মহাপাত্র ওরফে রাজদ্রোহী সব্যসাচী মল্লিক ।

‘ পথের দাবী ‘ – র অন্যতম কেন্দ্রীয় চরিত্র অপূর্ব যে সব্যসাচী মল্লিককে জানতেন তিনি ছিলেন বহু ভাষা ও বিষয়ে সুপণ্ডিত । লোকটিকে ছেড়ে বিজ্ঞান ও চিকিৎসাশাস্ত্রে পারদর্শী এবং বিদেশি ডিগ্রিপ্রাপ্ত এক ডাক্তার । কিন্তু সেই সব্যসাচী মল্লিক হিসেবে পুলিশ যাকে আটক করেছিল তার আচার – আচরণ কোনো কিছুই সব্যসাচীর সঙ্গে মেলে না । তাই অপূর্ব অনেকটা নিশ্চিত হয়েই এমন মন্তব্য করেছেন ।

4. তবে এ বস্তুটি পকেটে কেন ? – কোন বস্তুর কথা বলা হয়েছে ? তা পকেটে থাকার সপক্ষে যে – যুক্তিটি দেওয়া হয়েছিল , তা কতখানি সন্তোষজনক ?
Answer: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাস থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশে যে – বস্তুর কথা বলা হয়েছে তা হল একটি গাঁজার কলকে ।

পুলিশস্টেশনে তল্লাশির সময় গিরীশ মহাপাত্রের পকেটে গাঁজার কলকেটি পাওয়া যায় । দারোগা নিমাইবাবু কলকেটির সম্পর্কে জানতে চাইলে মহাপাত্র জানায় সে গাঁজা খায় না , কিন্তু সপক্ষে যুক্তি পথে কুড়িয়ে পেয়ে সেটি বন্ধুদের প্রয়োজনার্থেই পকেটে রেখেছে । অভিজ্ঞ দারোগা নিমাইবাবুর কাছে এই বক্তব্য যুক্তিগ্রাহ্য লাগেনি । কেন – না গিরীশ মহাপাত্রের চেহারার মধ্যে গাঁজা সেবনের লক্ষণ স্পষ্ট ছিল ।

5. কিন্তু পুলিশের দল এমন কাণ্ড করলে , এমন তামাশা দেখালে যে ও – কথা আর মনেই হলো না ।— ‘ ও – কথা ’ বলতে কোন কথার উল্লেখ করা হয়েছে । পুলিশের দল কী কাণ্ড করেছিল ?

Answer: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাস থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশে ‘ ও – কথা ’ বলতে অপূর্বর ঘরের চুরির অভিযোগের কথা বলা হয়েছে । রাজদ্রোহী সব্যসাচীর বর্মায় আসার খবরে সরকারি পুলিশ বর্মা ও রেঙ্গুনে কর্মরত ও কর্মপ্রার্থী বাঙালিদের আটক করে তল্লাশি চালাতে শুরু পুলিশের দলের কাণ্ড করেন । এই সময় গিরীশ মহাপাত্ররূপী সব্যসাচী ধরা পড়লেও তাঁর অদ্ভুত পোশাক ও চেহারা দেখে খানিকটা তাচ্ছিল্যের সঙ্গেই পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয় । একজন বিপ্লবীকে ধরতে পুলিশের কাণ্ডকারখানা দেখে অপূর্ব তার অভিযোগটি জানাতেই ভুলে গিয়েছিলেন ।

6. ‘ তাহার উৎকট হাসির বেগ কোনোমতে আর একবার সংবরণ করিয়া শেষে কহিল , ‘ —তার হাসির উদ্রেকের কারণ কী ? সে শেষে কী বলল ?
Answer: পাঠ্য ‘ পথের দাবী ‘ রচনাতে ‘ তাহার ’ বলতে অপূর্বর কথা বলা হয়েছে । বন্ধুর কাছে পুলিশস্টেশনে দেখা গিরীশ মহাপাত্রর অদ্ভুত আচার – আচরণ ও বেশভূষার বিবরণ দিতে গিয়ে হাসির উদ্রেকের কারণ তাঁর হাসির উদ্রেক হয়েছিল ।

অপূর্ব কোনো মতে তাঁর হাসির বেগকে সংবরণ করে বন্ধু রামদাসকে জানালেন , প্রখর বুদ্ধিদীপ্ত পুলিশকে যেভাবে সে বোকা বনতে দেখেছে তা আর কেউ দেখেনি । অথচ এরাই সরকারের বহু টাকা অপব্যয় করে অসম্ভবের আশায় ছুটে মরছে ।

7. ‘ বাবুজি , মায়নে আপকো তো জরুর কঁহা দেখা —কার উক্তি । উক্তিটির অন্তর্নিহিত অর্থ পরিস্ফুট করো ।
Answer: উদ্ধৃত উক্তিটি ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাসের অন্যতম চরিত্র অপূর্বর সহকর্মী রামদাস তলওয়ারকরের । অন্তর্নিহিত অর্থ . হিন্দিভাষী রামদাস রেলস্টেশনে প্রথমবার ছদ্মবেশী গিরীশ মহাপাত্রকে দেখে উক্তিটি করেছিলেন । উক্তিটির অর্থ হল , ‘ বাবুজি আমি আপনাকে অবশ্যই কোথাও দেখেছি । ইতিপূর্বে রামদাস হয়তো ছদ্মবেশী সব্যসাচীকে অথবা তার ছবি কোথাও দেখেছিলেন কিন্তু সঠিক ভাবে তা মনে করতে পারছিল না । তাই তিনি বার বার সন্দিগ্ধ দৃষ্টিতে গিরীশ মহাপাত্র বা সব্যসাচীকে দেখে , মনে করার একটা অসহায় চেষ্টা করছিল ।

8. ‘ ইচ্ছা করিলে আমি তোমাকে টানিয়া নীচে নামাইতে পারি।– প্রসঙ্গ নির্দেশ করে উদ্ধৃতাংশের তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো ।
Answer: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাসে উদ্ধৃত উক্তিটি করেছে বর্মা পুলিশের সাব – ইনস্পেক্টর । বাঙালি যুবক অপূর্ব তার অফিসের বড়োসাহেবের নির্দেশে প্রথম শ্রেণির যাত্রী হিসেবে ভামো যাচ্ছিলেন । তল্লাশির নাম করে পুলিশ যখন বার বার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাচ্ছিলেন তখন প্রতিবাদ করায় পুলিশ তার প্রতি এমন উক্তি করেছিলেন । বর্মা পুলিশের এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ উক্তিটি শুধু অপূর্বর উদ্দেশ্যে নয় এ যেন সমগ্র ভারতীয়র উদ্দেশ্যে করা । এ থেকে ইংরেজ শাসনে ভারতীয়দের সামাজিক অবস্থান ও নিজের দেশে পরবাসী হয়ে থাকার ছবি স্পষ্টরূপে প্রতীয়মান ।

9. ‘ বাবাই একদিন এঁর চাকরি করে দিয়েছিলেন । বক্তা কে ? তাঁর বাবা কাকে , কী চাকরি করে দিয়েছিলেন ?
Answer: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – এর ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশের অন্তর্গত আলোচ্য উদ্ধৃতাংশের বক্তা হলেন অপূর্ব । নিমাইবাবু ছিলেন অপূর্বর বাবার বন্ধু । অপূর্বর বাবা এই নিমাইবাবুকে ইংরেজশাসিত ভারতবর্ষে পুলিশের চাকরি করে কাকে , কী চাকরি দিয়েছে । এখন ব্রিটিশ পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তা নিমাইবাবু দেশপ্রেমিকদের আটক করে ব্রিটিশের দাসত্ব করেন ।

10. ‘ নিমাইবাবু চুপ করিয়া রহিলেন।- নিমাইবাবু কে ? তার চুপ করে থাকার কারণ ব্যাখ্যা করো ।
Answer: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ পথের দাবী ’ রচনাংশে নিমাইবাবু হলেন পুলিশের বড়োকর্তা বা দারোগাবাবু । চুপ থাকার কারণ → পুলিশের প্রধান লক্ষ্য ছিল বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিককে গ্রেপ্তার করা । তিনি ছিলেন চিকিৎসাবিদ্যায় সুপণ্ডিত , বহুভাষাবিদ ও বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিগ্রিপ্রাপ্ত এক অসামান্য ব্যক্তিত্ব । কিন্তু সব্যসাচী মল্লিক সন্দেহে আটক গিরীশ মহাপাত্রের বেশভূষা , আচার – আচরণ ও কালচার— এসব কোনো কিছুই সব্যসাচীর সঙ্গে মেলে না । তা দেখে থানায় উপস্থিত অপূর্ব আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলে ; এই ব্যক্তি যে সব্যসাচী মল্লিক নয় তার সে জামিন হতে পারে । অপূর্বর এ কথায় খানিক দ্বিধাগ্রস্ত নিমাইবাবু চুপ করে ছিলেন ।

11. ‘ আজ্ঞে না মাইরি খাইনে । — কার উক্তি ? কী কারণে এমন উক্তি ?
Answer: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ থেকে উদ্ধৃত উক্তিটির বক্তা সব্যসাচী মল্লিক সন্দেহে পুলিশস্টেশনে আটক , গিরীশ মহাপাত্র । খানাতল্লাশির সময় অন্যান্য আরও কয়েকটি জিনিসের সঙ্গে গিরীশের কাছ থেকে একটি গাঁজার কলকে পাওয়া যায় । থানার দারাগো নিমাইবাবুর প্রশ্নের উত্তরে ; সে গাঁজা খাওয়ার কথা অস্বীকার করে । কিন্তু নিমাইবাবুর অভিজ্ঞ চোখে মহাপাত্রের শরীরে গাঁজা খাওয়ার উত্তির কারণ বিভিন্ন লক্ষণ স্পষ্ট হয়ে ওঠে । তাই ভগ্ন – স্বাস্থ্যের গিরীশকে তিনি গাঁজা খেতে নিষেধ করেন । বয়স্ক নিমাইবাবুর এমন অনুরোধে মহাপাত্র পুনরায় গাঁজা খাওয়ার কথা অস্বীকার করে , প্রশ্নোদ্ধৃত মন্তব্যটি করেছিল ।

12. ’ রামদাস চুপ করিয়া রহিল , কিন্তু তাহার দুই চোখ ছলছল করিয়া আসিল । – রামদাস কে ? তার এমন অবস্থা হয়েছিল কেন ?

Answer: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে অপূর্বর রেঙ্গুনের অফিসের সহকর্মী ছিল রামদাস তলওয়ারকর । রামদাসের চোখ – মুখের অবস্থার পরিবর্তন অপূর্ব তাঁর জীবনের একটি বেদনাদায়ক ঘটনার কথা রামদাসকে বলে । একদিন অকারণে কয়েকজন ফিরিঙ্গি ছোঁড়া অপূর্বকে লাথি মেরে রেলওয়ে প্ল্যাটফর্মের বাইরে বের করে দেয় । অথচ এর প্রতিবাদ করতে যাওয়ায় সাহেব স্টেশনমাস্টারও তাকে তাড়িয়ে দেয় । ভারতের একটি রেলস্টেশনে আরেক ভারতীয় এমন অসহ্য অপমানে উপস্থিত কেউই এগিয়ে আসে না । এ ঘটনার কথা শুনে দুঃখে ও লজ্জায় এক অব্যক্ত অপমানে সহমর্মী রামদাসের দু – চোখ ছলছল করে উঠেছিল ।

13. ‘ কিন্তু বুনো হাঁস ধরাই যে এদের কাজ ; ‘ — বক্তা কে ? তার এই বক্তব্যের কারণ বিশ্লেষণ করো ।
Answer: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ থেকে উদ্ধৃত উক্তিটির বক্তা অপূর্বর সহকর্মী রামদাস তলওয়ারকর ।

অপূর্ব সহকর্মী ও বন্ধু রামদাসের কাছে পুলিশস্টেশনে ঘটা গিরীশ মহাপাত্রের বেশভূষা , আচার – আচরণের আদ্যোপান্ত বিবরণ তুলে ধরে । এ প্রসঙ্গে তথাকথিত বুদ্ধিদীপ্ত পুলিশকে যেভাবে সে বোকা বনতে দেখেছে ; তাও জানায় । অথচ এরাই সরকারের বহু টাকা এভাবেই ‘ বুনো হাঁস ‘ তথা বিপ্লবীদের ধরার পিছনে ছুটোছুটি করে অপব্যয় করছে । অপূর্বর এ কথায় রামদাস হেসে জানায় , চোর ধরার বদলে আসলে ‘ বুনো হাঁস ‘ ধরাই এখন পুলিশের মূল কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে ।

14. গিরীশ মহাপাত্রের চেহারার বর্ণনা দাও ।
Answer: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ’ – র মূল চরিত্র বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক গিরীশ মহাপাত্রের ছদ্মবেশে বর্মা আসেন । পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট হিসেবে গিরীশ মহাপাত্রের চেহারার বর্ণনা তাঁকে আটক করলেও বেশভূষা ও চেহারার বিভ্রান্তিতে পুলিশ তাঁকে ছেড়ে দেয় । বছর বত্রিশের সব্যসাচীর গায়ের ফরসা রং রোদে পুড়ে তামাটে হয়েছে । রোগা চেহারার মানুষটি সামান্য পরিশ্রমেই হাঁপাতে ও কাশতে থাকেন । দেখে আশঙ্কা হয় সংসারের মেয়াদ বুঝি তার ফুরিয়ে এসেছে । তাকে আলাদাভাবে চোখে পড়ে তার রোগা মুখের দুটি চোখের অদ্ভুত দৃষ্টির জন্য ।

15. তা ছাড়া আমার বড়ো লজ্জা এই যে …’- অপূর্বের লজ্জার কারণটি কী ছিল ? সেটি তার কাছে লজ্জার মনে হয়েছিল কেন ?
Answer: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ’ উপন্যাসের অন্যতম মুখ্য চরিত্র লজ্জার কারণ অপূর্বর লজ্জার কারণ বাংলা দেশের অত্যাচারী পুলিশবাহিনীর একজন বড়োকর্তা নিমাইবাবু তাঁর বাবার বন্ধু , তাঁর আত্মীয়সম । লজ্জা মনে হওয়ার কারণ [ ] ব্যাপারটা অপূর্বর কাছে লজ্জার মনে হয়েছিল কারণ এই নিমাইবাবু দেশের শত্রু ইংরেজদের দ্বারা পুলিশবাহিনীতে নিয়োজিত হয়েছিলেন । তিনি ইংরেজদের নুন খেয়ে প্রতিনিয়ত ভারতীয় বিপ্লবীদের ধরপাকড় ও অত্যাচার চালাতেন । ইংরেজের দাসত্বকারী এমন একজনকে আত্মীয় অপূর্বর লজ্জা হচ্ছিল ।

16. ‘ আমি ভীরু , কিন্তু তাই বলে অবিচারে দণ্ডভোগ করার অপমান আমাকে কম বাজে না ‘ — বক্তা কাকে এ কথা বলেছিলেন ? কোন্ অবিচারের দণ্ডভোগ তাঁকে ব্যথিত করেছিল ?
Answer: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশের কেন্দ্রীয় চরিত্র অপূর্ব তার সহকর্মী রামদাস তলওয়ারকরকে এ কথা বলেছিলেন । ফিরিঙ্গি ছোঁড়ারা বিনাদোষে অপূর্বকে তার নিজের দেশে লাথি মেরে প্ল্যাটফর্ম থেকে বার করে দিয়েছিল । অপূর্ব এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে ইংরেজ স্টেশনমাস্টার শুধুমাত্র ভারতীয় হওয়ার অপরাধে তাকে স্টেশন থেকে তাড়িয়ে দেয় । এই অকারণ লাঞ্ছনাই অপূর্বকে মনে মনে ব্যথিত করেছিল ।

17. এমন তো নিত্যনিয়তই ঘটছে- কোন ঘটনার কথা বলা হয়েছে ?
Answer: ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে উদ্ধৃতাংশে অপূর্বর জীবনের উদ্ধৃত অংশের ঘটনা এক অপমানজনক ঘটনার কথা বলা হয়েছে । অকারণে কয়েকজন ফিরিঙ্গি যুবক অপূর্বকে লাথি | মেরে রেলওয়ে প্ল্যাটফর্ম থেকে বের করে দিয়েছিল । এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গেলে সাহেব স্টেশনমাস্টার অপূর্বকে স্টেশন থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিল । যদিও স্টেশনটি ছিল ভারতবর্ষেরই এবং সেখানে যদিও বহু ভারতীয় উপস্থিত ছিল , তবু অপমানিত হওয়া অভ্যাস হয়ে যাওয়ায় তারা এর কোনো প্রতিবাদ করেনি । এই ঘটনা পরাধীন ভারতের অত্যাচার ও অপমানের দৈনন্দিন চিত্র ।

18. ‘ অতএব যাওয়াই স্থির হইল / – কোথায় যাওয়া স্থির হল ? কী কারণে সেখানে যাওয়া স্থির হয়েছিল ?
Answer: প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশে বক্তা অপূর্ব কর্মসূত্রে তার ভামো , ম্যান্ডালে , শোএবো , মিক্‌থিলা ও প্রোম শহরে যাওয়া স্থির হওয়ার কথা বলেছে ।

অপূর্বের বড়োসাহেব অপূর্বকে জানান যে , ভাষো – সহ তাদের ম্যান্ডালে , শোএবো , মিথিলা ও প্রোম শহরের অফিসে নানা ধরনের গোলযোগ ঘটছে । যেহেতু বড়োসাহেবের অবর্তমানে অপূর্বকেই সমস্ত ভার নিতে হবে , তাই সবকিছুর সঙ্গে তার পরিচয় থাকা উচিত । এইজন্য বড়োসাহেবের ইচ্ছা যে , অপূর্ব একবার সব অফিসে যাক ।

19. ‘ অপূর্ব হঠাৎ চকিত হইয়া বলিয়া উঠিল , ওই যে ! — ‘ ওই যে ’ বলে কাকে দেখানো হল ? অপূর্বের চকিত হওয়ার কারণ কী ?
Answer: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাস থেকে গৃহীত অংশে ‘ ওই “ ওই যে সম্বোধন যে ’ বলে বক্তা অপূর্ব তার সহকর্মীকে যাকে দেখিয়েছিলেন তিনি হলেন ছদ্মবেশী সব্যসাচী ওরফে গিরীশ মহাপাত্র । অপূর্ব তার ঘরে চুরির অভিযোগ জানাতে থানায় গিয়ে পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট গিরীশ মহাপাত্রকে দেখেছিলেন । গিরীশের বেশভূষা অপূর্বর মনে হাসি জাগালেও তার একটা সন্দেহের কথা তিনি চকিত হওয়ার কারণ সহকর্মী রামদাসকে বলেছিলেন । সেই গিরীশকে সহসা স্টেশনে দেখতে পেয়ে অপুর্ব চকিত হয়ে উঠেছিলেন । ‘ আমাকে কিন্তু বাবু বুটমুট হয়রান করা ।

20. উক্তি ? তাকে ঝুটমুট হয়রান করা হয়েছে বলার কারণ কী ?
Answer: উদ্ধৃত উক্তিটি শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র ছদ্মবেশী গিরীশ মহাপাত্র ওরফে সব্যসাচী মল্লিকের ।

সব্যসাচী মল্লিকের বর্মায় আসার খবর পেয়ে পুলিশ তাকে পাকড়াও করার জন্য বর্মা ও রেঙ্গুনের কর্মরত ও কর্মপ্রার্থী বাঙালিদের ওপর নজর রাখে । সেই কারণেই গিরীশ মহাপাত্রকে থানায় জেরা ও তল্লাশি করা হয় । কিন্তু তাঁর কাছে সন্দেহজনক কিছু না পেয়ে পুলিশ তাঁকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হন । অপূর্ব সেই ঘটনার সাক্ষী ছিলেন । পরবর্তীকালে অপূর্বর সঙ্গে তাঁর দেখা হলে তিনি কথাগুলি বলেছিলেন ।

21. কেবল আশ্চর্য সেই রোগা মুখের অদ্ভুত দুটি চোখের দৃষ্টি ।’- কার চোখের কথা বলা হয়েছে ? চোখদুটির বর্ণনা দাও ।
Answer: চোখ দুটির বর্ণনা উত্তর উদ্ধৃতাংশে শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ – র কেন্দ্রীয় চরিত্র সব্যসাচী ওরফে গিরীশ মহাপাত্রের চোখের কথা বলা হয়েছে ।

অদ্ভুত বেশভূষাধারী ও রুগ্‌ণ গিরীশ মহাপাত্রের চেহারার সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল তার চোখ দুটি । সে – চোখ ছোটো কী বড়ো , টানা কী গোল , দীপ্ত কী প্রভাহীন সে – বিচার করতে যাওয়া বৃথা । অত্যন্ত গভীর জলাশয়ের মতো চোখ দুটিতে এমন কিছু আছে যেখানে কোনো খেলা চলবে না , যেখান থেকে সাবধানে দূরে দাঁড়ানোই শ্রেয় । আসলে গিরীশ মহাপাত্রের চোখ ছদ্মবেশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা অসাধারণ সব্যসাচী মল্লিককেই প্রকাশ করে ।

22. বার্বুটির স্বাস্থ্য গেছে , কিন্তু শখ ষোলোআনাই বজায় আছে তা স্বীকার করতে হবে ।’— ‘ বাবুটি ’ কে ? তার শখ যে বজায় আছে , তা কীভাবে বোঝা গেল ?
Answer: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ – র আলোচ্য অংশে নিমাইবাবুর কথায় ‘ বাবুটি ’ হল ছদ্মবেশী গিরীশ মহাপাত্র । → গিরীশ মহাপাত্রের মাথার বাহারি ছাঁট , চুলে সুগন্ধি তেল , পরনে রামধনু রঙের জাপানি সিল্কের পাঞ্জাবি ও বিলিতি মখমল পাড়ের সূক্ষ্ম কালো শাড়ি , পকেটে বাঘ আঁকা শখ বজায় থাকার লক্ষণ রুমাল , পায়ে হাঁটু পর্যন্ত লাল ফিতে দিয়ে বাঁধা সবুজ মোজা ও বার্নিশ করা পাম্প শু , হাতে হরিণের শিঙের হাতল দেওয়া বেতের ছড়ি তার শখ ‘ বজায়ের পরিচয় দেয় ।

23. ‘ বুড়োমানুষের কথাটা শুনো।— ‘ বুড়োমানুষ ‘ কে ? তাঁর কোন্ কথা শুনতে বলা হচ্ছে ?
Answer: ‘ পথের দাবী ‘ – র উদ্ধৃতাংশে ‘ বুড়োমানুষ ‘ বলতে দারোগা নিমাইবাবু নিজেকে বুঝিয়েছেন । যে – কথা শুনতে বলা হচ্ছে । গিরীশ মহাপাত্রের ছদ্মবেশে বিপ্লবী সব্যসাচী বর্মায় আসেন । সন্দেহভাজন হিসেবে পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে । তল্লাশিতে তাঁর পকেটে গাঁজার কলকে পাওয়া গেলেও তিনি গাঁজা খাওয়ার কথা অস্বীকার করেন । দারোগা নিমাইবাবু তাঁর অভিজ্ঞতার জোরে মহাপাত্রের চেহারার মধ্যে গাঁজা খাওয়ার সুস্পষ্ট লক্ষণ প্রত্যক্ষ করেন । তাই ভগ্ন স্বাস্থ্যের মহাপাত্রকে নিমাইবাবু গাঁজা না খাওয়ার পরামর্শ দেন ।

24. ‘ দয়ার সাগর ! পরকে সেজে দি , নিজে খাইনে । মিথ্যেবাদী কোথাকার ! -কার উদ্দেশ্যে এই উক্তি ? তাকে ‘ দয়ার সাগর ’ ও ‘ মিথ্যেবাদী ‘ বলার কারণ কী ?
Answer: আমাদের পাঠ্য শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাসের অংশবিশেষে পুলিশকর্মী জগদীশবাবু থানায় আটক যার উদ্দেশ্যে উক্তি সন্দেহভাজন গিরীশ মহাপাত্রের উদ্দেশ্যে উক্তিটি করেছেন ।

‘ থানায় গিরীশ মহাপাত্রের পকেট তল্লাশি করে গাঁজার কলকে পেয়ে নিমাইবাবু তাকে গাঁজা খাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করেন । উত্তরে সে জানায় সে খায় না তবে বন্ধুদের তৈরি করে দেয় । এ কথা শুনে সেখানে উপস্থিত জগদীশবাবু তাকে ‘ দয়ার সাগর ‘ বলে বাচ্চা করেন এবং তার মধ্যে গাঁজা খাওয়ার সব লক্ষণ প্রকট থাকায় তাকে মিথ্যেবাদী বলেন ।

25. ‘ সে যে বর্মায় এসেছে এখবর সত্য । – ‘ সে ’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে । তার আসার খবরে পুলিশকর্মীরা কী কী করেছিলেন ।
Answer: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ – র উদ্ধৃতাংশে ‘ সে ’ বলতে পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট সব্যসাচী মল্লিকের কথা বলা হয়েছে । সরকারি পুলিশ বাহিনীর কাছে রাজদ্রোহী সব্যসাচী মল্লিকের বর্মায় আসার খবর পৌঁছোনো মাত্রেই তাঁরা তল্লাশির মাত্রাও বাড়িয়ে দেন । তারা পুলিশের তৎপরতা বর্মা এবং রেঙ্গুনে কর্মরত ও কাজের সন্ধানে আসা বাঙালিদের আটক করে তল্লাশি চালান । এমনকি উপরও বিশেষভাবে নজর দেওয়ার কথা বলা হয় ।

26. অপূর্ব কিছু আশ্চর্য হইয়া কহিল , — অপূর্ব কেন আশ্চর্য হল ? তার আশ্চর্য হওয়ার প্রকৃত কারণটি কী ছিল ?
Answer: ‘ পথের দাবী ‘ – তে অপূর্বর সহকর্মী রামদাস তলওয়ারকর অপূর্বকে অন্যমনস্কভাবে বসে থাকতে দেখে সে বাড়ির চিঠি পেয়েছে কিনা এবং বাড়ির সবাই ভালো আছে কিনা — এমন প্রশ্ন করে বসে । হঠাৎ এমন প্রশ্ন শুনে অপূর্ব আশ্চর্য হয় ।

রাজদ্রোহী সব্যসাচীর বর্মায় আসার খবর পেয়ে পুলিশ খানাতল্লাশি বাড়িয়েও তাকে ধরতে ব্যর্থ হন । সব্যসাচীর ধরা না – পড়া বা কোনো দুর্ঘটনা না ঘটার মতো সৌভাগ্যকে অপূর্বর অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছিল । তাই দৈনন্দিন কাজের মাঝে অপূর্ব কোথাও যেন অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছিল ।

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর | পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – মাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | Madhyamik Bengali Pather Dabi Question and Answer :​


1. ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাসের যে – অংশ তোমাদের পাঠ্য , তা অনুসারে অপূর্ব চরিত্রটি আলোচনা করো ।
Ans: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশের মুখ্য চরিত্র অপূর্ব একজন সৎ – শিক্ষিত – আদর্শবাদী ও সংবেদনশীল যুবক । চাকরির সন্ধানে তার বর্মায় আসা । পাঠ্যাংশে অপূর্বর চরিত্রের দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য দেখতে পাওয়া যায়—

দেশপ্রেমিক : অপূর্ব পরাধীন ভারতের এক তরুণ দেশপ্রেমিক । সব্যসাচীর প্রতি সে আন্তরিকভাবে শ্রদ্ধাশীল । গিরীশ মহাপাত্রকে প্রথম দর্শনে সে হাসি সামলাতে না পারলেও বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিকের বর্মায় আগমন ও পুলিশি সতর্কতা সত্ত্বেও তার ধরা না পড়া অপূর্বকে বিচলিত করে তোলে । গিরীশ মহাপাত্রের প্রতি অপূর্বর সন্দেহ যত বেড়েছে সব্যসাচীর প্রতি শ্রদ্ধা । তত প্রগাঢ় হয়েছে । সহকর্মী রামদাসের কাছে তার সরল স্বীকারোক্তি ইংরেজ ভৃত্য আত্মীয়ের চেয়ে অনাত্মীয় দেশপ্রেমিক সব্যসাচী তার বেশি আপনার । দেশের অপমান ভুক্তভোগী অপূর্বর বুকে বেঁধে । শরৎচন্দ্র সেই বাঙালি বিপ্লবী তরুণদের আদর্শে অপূর্বকে গড়ে তুলেছেন যাদের ধমনিতে পরাধীনতার ও দাসত্বের যন্ত্রণা থেকে মুক্তির আকাঙ্ক্ষা শোণিতের মতো প্রবাহিত । তাই সব্যসাচীর মতো রাজদ্রোহীরা অপূর্বদের আদর্শ নায়ক । এদের মধ্যেই তরুণ বিপ্লবীরা নিজেদের খুঁজে পেতেন ।

গুরুজনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল : বিপ্লবী সব্যসাচীর দৃঢ়তা ব্যক্তিত্বকে অপূর্ব শ্রদ্ধা করলেও প্রকাশ্যে রাজদ্রোহিতার সাহস তার ছিল না । সেই কারণে ইংরেজ বিদ্বেষী অপূর্ব তার পিতার বন্ধু নিমাইবাবু ইংরেজ কর্মচারী জেনেও তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিল ।

এভাবেই ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাসের কথক অপূর্ব পরাধীন ভারতের শিক্ষিত তরুণদের এক সার্থক টাইপ চরিত্ররূপে প্রতিভাত হয়েছে ।

2. ‘ অপূর্ব হঠাৎ চকিত হইয়া বলিয়া উঠিল , ওই যে । —প্রসঙ্গ কী ? চকিত হয়ে উদ্দিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে যে – কথাবার্তা হয়েছিল । তা আলোচনা করো ।
Ans: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশ অনুসারে , অপূর্বকে অফিসের কাজে রেঙ্গুন থেকে ভামোয় রওনা হতে হয় । বড়োসাহেবের নির্দেশ পেয়ে সে পরদিন বিকেলে ভামোর উদ্দেশে ট্রেনে চেপে বসে । ট্রেন ছাড়তে যখন মিনিট পাঁচেক বাকি তখন সে আচমকা গিরীশ মহাপাত্রকে প্ল্যাটফর্মে দেখতে পায় । এর আগে গিরীশকে সে পুলিশস্টেশনে সব্যসাচী মল্লিক সন্দেহে আটক অবস্থায় দেখেছিল । অদ্ভুত বেশভূষার গিরীশ মহাপাত্রের সঙ্গে এই নিয়ে অপূর্বর দ্বিতীয়বার দেখা হয় ।

অপূর্ব এবং গিরীশ মহাপাত্র পরস্পরের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে । অপূর্ব জানায় , সে ভামোর পথে চলেছে আর গিরীশ এনাঞ্ঝাং থেকে আগত দুই বন্ধুর সঙ্গে দেখা করার উদ্দেশ্যে নিয়ে এসেছে । এই সময়েই গিরীশ জানায় পুলিশ তার মতো সাধারণ ধর্মভীরু মানুষকে অনর্থক হয়রান করছে । সে কোনোরকম কুকর্মের সঙ্গে জড়িত নয় । তখন প্রত্যুত্তরে অপূর্ব জানায় , সে কোনোভাবেই পুলিশের লোক নয় ঘটনাচক্রে কেবল ওখানে উপস্থিত ছিল । এমন পরিস্থিতিতে রামদাস গিরীশকে কোথাও দেখার কথা বললে , গিরীশ আশ্চর্য হয় না । শুধু বারবার অনুরোধ করতে থাকে যে , তার ওপর যেন কেউ মিথ্যে সন্দেহ না রাখে । কারণ সে ব্রাহ্মণ বংশীয় , লেখাপড়া – শাস্ত্রজ্ঞান— কিছুটা সেও জানে । কপালের দোষে আজ তার এই অবস্থা । কিন্তু অপূর্বর মতো বড়োমানুষদের বিষনজরে পড়লে আর হয়তো একটা চাকরিও জুটবে না । এইসব বলতে বলতেই গিরীশ পুনরায় ‘ নমস্কার ‘ – ‘ রাম রাম ‘ ইত্যাদি জানিয়ে কাশির বেগ সামলিয়ে বিদায় নিয়েছিল ।

3. রামদাস তলওয়ারকর চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো ।
Answer: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাসের একটি পার্শ্বচরিত্র হল রামদাস তলওয়ারকর । অপূর্বর সহকর্মী তলওয়ারকর খুব গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র না হয়েও যথেষ্ট গুরুদায়িত্ব পালন করেছে । তাকে অবলম্বন করেই পাঠ্য অংশে অপূর্ব নিজের ভাবনাচিন্তা ব্যক্ত করেছে । রামদাস তলওয়ারকর সহকর্মীর চেয়েও অনেক বেশি সহমর্মী ও বন্ধু । ছদ্মবেশী সব্যসাচীকে দেখে আনমনা অপূর্বের বাড়ির পরিস্থিতি কুশল কিনা , তা সে জানার চেষ্টা করেছে । তার স্ত্রী প্রতিদিন অপুর্বর জলযোগ সরবরাহ করেছে । তলওয়ারকর অপূর্বর সমস্ত কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছে তা সে অপূর্বর ঘরে চুরি ও উপরতলার ক্রিশ্চান মেয়ের দ্বারা সম্পদ রক্ষার গল্পই হোক বা ইংরেজ কর্তৃক অপূর্বর অপমানের কাহিনিই হোক । রেঙ্গুন পুলিশস্টেশনে দেখা অদ্ভূত দর্শন গিরীশ মহাপাত্রের বর্ণনা দিতে গিয়ে তার সঙ্গে প্রচণ্ড হাসিতে ফেটে পড়েছে অপূর্ব । কিন্তু সঙ্গ দিতে গিয়ে তলওয়ারকর কখনোই অপূর্বর ছায়াতে পরিণত হয়নি । অপূর্বকে ট্রেনে তুলতে গিয়ে গিরীশ মহাপাত্রকে দেখে তার মনে সন্দেহ জেগেছে । প্রখর বুদ্ধিমান ছদ্মবেশী বিপ্লবী সব্যসাচীও তার মন থেকে সন্দেহ দূর করতে পারেনি । রামদাস মনে মনে গিরীশের প্রকৃত পরিচয় হাতড়ে বেড়িয়েছে । এভাবেই বুদ্ধিতে , বন্ধুত্বে , সাহচর্যে এবং সমবেদনায় রামদাস স্বল্প পরিসরেও তার স্বাতন্ত্র্য রক্ষা করে ।

4. ‘ নিমাইবাবু ‘ – র চরিত্রটি আলোচনা করো ।
Answer: অপরাজেয় কথাশিল্পী শরত্চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা কালজয়ী রাজনৈতিক উপন্যাস ‘ পথের দাবী ‘ থেকে গৃহীত দশম শ্রেণির পাঠ্য অংশে ‘ নিমাইবাবু ‘ সম্পর্কে যা জানা যায় , তা হল — নিমাইবাবু হলেন কাহিনির কেন্দ্রীয় চরিত্র অপূর্বর পিতৃবন্ধু , সেই সূত্রে আত্মীয় । অপূর্বর পিতা কোনো একসময়ে তাঁকে চাকরিতে ঢুকিয়েছিলেন । এই সূত্রে যে সম্বন্ধ স্থাপিত হয়েছে , তা দু – পক্ষই বহন করে নিয়ে চলেছে । রেঙ্গুনের পুলিশস্টেশনে বাংলা পুলিশের দারোগা নিমাইবাবুকে ছদ্মবেশী বিপ্লবী সব্যসাচী ওরফে গিরীশ মহাপাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দেখা যায় । তবে অভিজ্ঞ ও বর্ষীয়ান নিমাইবাবুও সব্যসাচীকে চিনতে ভুল করে ফেলেন । তাকে সাধারণ গঞ্জিকাসেবক বলে ছেড়েও দেন । তবে তাঁর স্নেহপ্রবণ মন বোঝা যায় , যখন গিরীশ মহাপাত্ররুপী সব্যসাচীর রুগ্‌ণ দেহ দেখে তিনি কোমল স্বরে তাকে গাঁজা না খাওয়ার পরামর্শ দেন এবং বলেন ‘ বুড়োমানুষের কথাটা শুনো । এক্ষেত্রে এক প্রৌঢ় স্নেহশীল পিতার প্রতিচ্ছবি নিমাইবাবুর মধ্যে ফুটে ওঠে

5. ‘ এমন তো নিত্য নিয়তই ঘটছে । এখানে কোন ঘটনার কথা বলা হয়েছে ?
Answer: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ পথের দাবী ‘ রচনার কেন্দ্রীয় চরিত্র অপূর্ব । সে বন্ধু ও সহকর্মী রামদাস তলওয়ারকর – এর কাছে রেঙ্গুন পুলিশস্টেশনে ঘটা একটি ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে ; দেশ ও দেশপ্রেমিক বিপ্লবীদের প্রতি নিজের অন্তরের ভালোবাসার কথা স্বীকার করে । মাতৃভূমির স্বাধীনতা কিংবা মুক্তির সংগ্রামে যাঁরা প্রাণপণ সচেষ্ট , তাদের ‘ আপনার নয় ’ বলবার সাধ্য অপূর্বর নেই । কারণ অন্যায় অবিচারের শাস্তিভোগ করার যন্ত্রণা তাকেও সহ্য করতে হয়েছে । এ প্রসঙ্গে একটি বেদনাদায়ক ঘটনার কথা সে বলে । একদিন কয়েকজন ফিরিঙ্গি ছোঁড়ার হাতে অপূর্বকে বিনা কারণে মানসিক ও শারীরিকভাবে নিগৃহীত হতে হয় । এর প্রতিবাদে সাহেব স্টেশনমাস্টারের কাছে গেলে , সেখানেও তার কপালে জোটে অপমান এবং লাঞ্ছনা । তবে অপূর্বর কাছে এর চেয়েও বেদনাবহ ছিল ঘটনাস্থলে উপস্থিত ভারতীয়দের নীরবতার অভ্যেস । এমন পরিস্থিতিতে অভ্যস্ত এক অসহায় দুর্বল ও ক্লীব জাতির দাসত্বের ছবি , তাকে দুঃখে – লজ্জায় এবং ঘৃণায় হতবাক করে দিয়েছিল । এক শিক্ষিত দেশপ্রেমিক তরুণের কাছে ব্যক্তিগত নয় যেখানে সমগ্র জাতির অপমান জড়িত ; তাকে ভাষায় প্রকাশ করা অনেক বেশি লজ্জা ও অসম্মানের । অথচ এমন অন্যায় লাঞ্ছনার ঘটনা প্রতিনিয়তই প্রতিকারহীনভাবে ঘটে চলেছে । এ কথাই অপূর্বর কণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছে ।

6. “ পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট সব্যসাচী মল্লিককে নিমাইবাবুর সম্মুখে হাজির করা হইল ।’— ‘ পথের দাবী ‘ পাঠ্যাংশে = সব্যসাচী মল্লিক সম্পর্কে কী জানা যায় ? তাকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় কী পরিস্থিতি তৈরি হয় ?
Answer: আলোচ্য অংশটি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা ‘ পথের দাবী ’ রচনাংশ থেকে গৃহীত । পাঠ্যাংশটি থেকে জানা যায় , পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট সব্যসাচী মল্লিক বিজ্ঞান ও চিকিৎসাশাস্ত্রে অসাধারণ পারদর্শী , ডাক্তারিতে বিলিতি ডিগ্রিধারী এক রাজদ্রোহী ।

সব্যসাচী মল্লিক সন্দেহে যাকে নিমাইবাবুর সামনে হাজির করা হল সে নিজের পরিচয় দিল গিরীশ মহাপাত্র বলে । রুগ্ণ চেহারার বছর ত্রিশ – বত্রিশের লোকটির সাজপোশাক ভারি অদ্ভুত । কিন্তু তার দৃষ্টি ছিল অন্তর্ভেদী । সে তেলের খনিতেই কাজ করত । বর্মা থেকেই সে রেঙ্গুনে এসেছে । তার কাছ থেকে উদ্ধার করা জিনিসপত্রের মধ্যে ছিল লোহার কম্পাস , কাঠের ফুটবুল , একটা টাকা , কিছু বিড়ি , একটা দেশলাই আর একটা গাঁজার কলকে । নিমাইবাবু তাকে গাঁজার কলকে প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করলে সে জানায় , কলকেটা সে পথে কুড়িয়ে পেয়ে রেখে দিয়েছে । সে নিজে গাঁজা খায় না বটে , তবে প্রয়োজনে অন্যকে বানিয়ে দেয় । কিন্তু তার কথায় কেউই বিশ্বাস করে না । বরং গিরীশ মহাপাত্রের চেহারা , সাজপোশাক আচার – আচরণ ও কথাবার্তা থেকে থানায় উপস্থিত সকলেই এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয় যে , এই ব্যক্তি কোনোভাবেই সব্যসাচী মল্লিক হতে পারেন না । তাই তাকে নিয়ে খানিক হাসিতামাশার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় ।

7. গিরীশ মহাপাত্রের চেহারা ও পোশাক – আশাকের বিস্তারিত বিবরণ দাও ।
Answer: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ পথের দাবী ‘ রচনাংশের কেন্দ্রীয় চরিত্র সব্যসাচী মল্লিকের ছদ্মবেশী রূপই হল গিরীশ মহাপাত্র । ছদ্মবেশী সব্যসাচী এই উপন্যাসে যেন সম্পূর্ণ একটি আলাদা চরিত্ররূপে আমাদের কাছে ধরা দেয় । পুলিশস্টেশনের মধ্যে কাশতে কাশতে তার আবির্ভাব । রোদে পুড়ে তার গায়ের অত্যন্ত ফরসা রং প্রায় তামাটে হয়ে গেছে । বয়স ত্রিশ – বত্রিশের মধ্যে হলেও , অত্যধিক বুগণতার জন্য তাকে দেখে মনে হয় যেন আয়ুর শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে । তবে এমন শারীরিক গড়ন ও চেহারার মধ্যেও উল্লেখযোগ্য তার রোগা মুখের অদ্ভুত দুটি চোখের দৃষ্টি ।

আসলে মহাপাত্ররূপী সব্যসাচী সব কিছু লুকোলেও , অতলস্পর্শী চোখ দুটিকে তার পক্ষে লুকোনো সম্ভব ছিল না । পোশাক – আশাক তার মাথার সামনের চুল লম্বা । যদিও ঘাড় ও কানের কাছে প্রায় নেই । তার চেরা সিঁথি করা তেল জবজবে মাথা থেকে উগ্র নেবুর তেলের গন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে । গিরীশের পরনে ছিল জাপানি সিল্কের রামধনু রঙের চুড়িদার পাঞ্জাবি , যার বুকপকেট থেকে বাঘ – আঁকা একটা রুমালের কিছুটা দেখা যাচ্ছিল । যদিও তার কাঁধে উত্তরীয়ের কোনো বালাই ছিল না । সে পরনে বিলাতি মিলের কালো মকমলের সূক্ষ্ম শাড়ি পরেছিল । তার পায়ে ছিল লাল ফিতে বাঁধা সবুজ ফুল মোজা ও তলায় আগাগোড়া নাল বাঁধানো বার্নিশ করা পাম্প শু । আর তার হাতে ধরা একগাছি হরিণের শিং দিয়ে হাতল বাঁধানো বেতের ছড়ি । তবে এত শখশৌখিনতা – পরিপাট্য এসবই জাহাজযাত্রার ধকলে নোংরা ও মলিন এবং তার শরীরে গাঁজা খাওয়ার লক্ষণ আর ক্লান্তির ছাপ বেশ স্পষ্টভাবে প্রতিভাত হচ্ছিল ।

8. ‘ কই এ ঘটনা তো আমাকে বলেননি । — কোন্ ঘটনার প্রশ্ন । কথা বলা হয়েছে ? এ ঘটনা বক্তাকে না বলার কারণ কী ছিল ?
Answer: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাসের অংশবিশেষ থেকে গৃহীত উদ্ধৃতিটির বক্তা হল অপূর্বর সহকর্মী রামদাস তলওয়ারকর । ঘটনাটি হল , উদ্দিষ্ট ঘটনার ৮ উপন্যাসের অন্যতম চরিত্র অপূর্ব ফিরিঙ্গি যুবকদের পরিচয় হাতে কোনো এক প্ল্যাটফর্মে অপমানিত ও শারীরিকভাবে নিগৃহীত হন । সেই অন্যায়ের প্রতিবাদ করেন অপূর্ব । কিন্তু তিনি ভারতীয় বলে স্টেশনমাস্টার তাঁকে অপমান করে তাড়িয়ে দেন ।

অপূর্ব তার অপমানের কাহিনি তার সহকর্মী রামদাসকে আগে বলেনি । এই জন্য রামদাস অভিমানের সঙ্গে অভিযোগ জানালে অপূর্ব বলে যে , নিজস্ব অপমান ব্যক্ত করা সহজ নয় । বিশেষত যেখানে শুধু নিজে নয় , সমগ্র জাতি জড়িত , তা প্রকাশ করা আরও বেশি অপমানের । ফিরিঙ্গি যুবকদের অপমান অপূর্বর কাছে বেদনার ছিল । কিন্তু তার চেয়ে বেশি বেদনার ছিল সেদিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ভারতীয়রা তার সেই অপমানকে মেনে নিয়েছিল । এই ঘটনায় শোষিত , পীড়িত , অসম্মানে অভ্যস্ত এক পরাধীন জাতির পঙ্গু ও ক্লীব ছবিটি ফুটে ওঠে । যে – ছবি তরুণ দেশপ্রেমিক অপূর্বর কাছে গভীর যন্ত্রণা ও লজ্জার । পিতৃবন্ধু দারাগো নিমাইবাবুর চেয়ে বিপ্লবী সব্যসাচী মল্লিক কেন তার কাছে বেশি আপন তা বোঝাতে গিয়েই অপূর্ব মনের মধ্যে লুকোনো বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতার কথাগুলো বলে ফেলে ।

9. ‘ বাবুটির স্বাস্থ্য গেছে , কিন্তু শখ ষোলোআনাই বজায় আছে- বাবুটি কে ? তার সাজসজ্জার পরিচয় দাও ।
Answer: শরৎচন্দ্রের ‘ পথের দাবী ‘ উপন্যাস থেকে গৃহীত উদ্ধৃতিটির বাবুটির পরিচয় বস্তুা হলেন পরাধীন ভারতে ব্রিটিশ অধীনস্থ এক বাঙালি পুলিশকর্তা নিমাইবাবু । তিনি পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট হিসেবে চিহ্নিত ছদ্মবেশী গিরীশ মহাপাত্র সম্পর্কে এমন মন্তব্য করেছেন ।

বছর ত্রিশ – বত্রিশের ছদ্মবেশী গিরীশ মহাপাত্রের ফরসা রং রোদে পুড়ে তামাটে হয়ে গেছে । রোগা চেহারার মানুষটি যখন কাশতে কাশতে থানায় প্রবেশ করল তখন তার দেহের সামগ্রিক অবস্থা দেখে মনে হচ্ছিল সেটি দ্রুত বেগে ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে । কিন্তু তার রোগা মুখের দুটি চোখের দৃষ্টি ভারি অদ্ভুত । জলাশয়ের মতো গভীর সে চোখের সঙ্গে খেলা চলবে না । দূরে থাকতে হবে । সেই ক্ষীণ চোখের অতলে কোথাও যেন প্রাণশক্তি লুকিয়ে আছে , আর সে জন্যই সে বেঁচে আছে । গিরীশ মহাপাত্র যে অত্যন্ত শৌখিন মানুষ তা তার বেশভূষাতেই প্রমাণিত । চুলে বাহারি ছাঁট । তাতে সুগন্ধি নেবু তেল । গায়ে জাপানি সিল্কের রামধনু রঙের চুড়িদার পাঞ্জাবি । পকেটে বাঘ – আঁকা রুমাল । পরনে বিলেতি মখমল পাড়ের কালো শাড়ি । হাঁটু পর্যন্ত মোজা লাল রিবন দিয়ে বাঁধা এবং পায়ে নাল লাগানো বার্নিশ করা পাম্প । হাতে হরিণের শিং দিয়ে বাঁধানো বেতের শৌখিন ছড়ি । এসব দেখেই নিমাইবাবু রসিকতার হলে কথাগুলি বলেছিলেন ।






মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন – পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion PDF Download
মাধ্যমিক বাংলা, মাধ্যমিক বাংলা, মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর, নবম শ্রেণি বাংলা, দশম শ্রেণি বাংলা, নবম শ্রেণি বাংলা, দশম শ্রেণি বাংলা, ক্লাস টেন বাংলা, মাধ্যমিকের বাংলা, বাংলা মাধ্যমিক – পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, দশম শ্রেণী – পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, মাধ্যমিক বাংলা পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, ক্লাস টেন পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, Madhyamik Bengali – পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, Class 10th পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, Class X পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, ইংলিশ, মাধ্যমিক ইংলিশ, পরীক্ষা প্রস্তুতি, রেল, গ্রুপ ডি, এস এস সি, পি, এস, সি, সি এস সি, ডব্লু বি সি এস, নেট, সেট, চাকরির পরীক্ষা প্রস্তুতি, Madhyamik Bengali Suggestion , West Bengal Madhyamik Class 10 Bengali Suggestion, West Bengal Secondary Board exam suggestion , WBBSE , মাধ্যমিক সাজেশান, মাধ্যমিক সাজেশান , মাধ্যমিক সাজেশান , মাধ্যমিক সাজেশন, মাধ্যমিক বাংলা সাজেশান , মাধ্যমিক বাংলা সাজেশান , মাধ্যমিক বাংলা , মাধ্যমিক বাংলা, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ, Madhyamik Bengali Suggestion Bengali , মাধ্যমিক বাংলা – পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion PDF PDF, মাধ্যমিক বাংলা – পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion PDF PDF, মাধ্যমিক বাংলা – পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion PDF PDF, মাধ্যমিক বাংলা – পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion PDF PDF, মাধ্যমিক বাংলা – পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion PDF PDF, মাধ্যমিক বাংলা – পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion PDF PDF,মাধ্যমিক বাংলা – পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion PDF PDF, মাধ্যমিক বাংলা – পথের দাবী (গল্প) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion PDF, Madhyamik Class 10 Bengali Suggestion PDF.


 

Latest resources

AdBlock Detected

We get it, advertisements are annoying!

Sure, ad-blocking software does a great job at blocking ads, but it also blocks useful features of our website. For the best site experience please disable your AdBlocker.

I've Disabled AdBlock